লালমনিরহাট প্রতিনিধি : গত ৪ দিন ধরে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের লালমনিরহাটে তিস্তা নদী পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে লালমনিরহাট জেলার ৫ উপজেলার তিস্তা পাড়ের বেশ কিছু এলাকায় পানি ঢুকে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন লোকজন।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা নদীর ওপর থাকা তিস্তা ব্যারাজের উজানে ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানিপ্রবাহ পরিমাপ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী (পানি পরিমাপক) প্রকৌশলী আমিনুর রশীদ। পানি আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ফলে তিস্তা নদীর দুই তীরের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকে পড়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার প্রায় ১ হাজার পরিবারের স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, ডাউয়াবাড়ী, সিঙ্গীমারী, পাটিকাপাড়া, সিন্দুর্না, কালীগঞ্জের কাকিনা, তুষভান্ডার, আদিতমারীর মহিষখোচা, লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা, রাজপুর ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন তিস্তা নদী বৃদ্ধি হওয়ায় কিছু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন স্পার-২ এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে আবুল কালাম আজাদ জানান, তিস্তার পানি ঢুকে গোবর্দ্ধন স্পার-২ এলাকার কিছু বাড়ি তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার লোকজন পশু-পাখি নিয়ে মারাত্মক সংকটে পড়েছেন।
এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না এলাকার মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে বাদল হোসেন বলেন, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় নদীর আশপাশের লোকজনের বাড়িতে পানি ঢুকে বন্যা দেখা দিয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে এবং উজান থেকে নেমে আসা পানিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য তিস্তা পাড়ের বসবাসরত লোকজনকে সতর্ক থাকতে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে খবর পাঠিয়েছি।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ এনামুল কবির বলেন, তিস্তা নদীর পানিবৃদ্ধির খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।